আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন পড়ে অসংখ্য জিনিসের।
ঘরে থাকা একই জিনিস আমরা হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করি, আর এই দীর্ঘ সময় ব্যবহার করার ফলে সে গুলো হয়ে উঠতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
কারণ দীর্ঘদিন একই ভাবে থাকার জন্য জিনিসগুলি হয়ে উঠতে পারে অস্বাস্থ্যকর।
তাই নির্দিষ্ট সময়ের পর কিছু জিনিস বদলে নেয়া জরুরি।
আর যদি একান্তই না পারেন তাহলে সঠিক ভাবে নির্দিষ্ট সময় পর পর এই গুলো পরিষ্কার করা উচিত বা ঠিক ভাবে যত্ন নেয়া উচিত।
তো চলুন আজকে জেনে নি দৈনিক ব্যবহৃত কোন জিনিসগুলি সময় থাকতে পাল্টে ফেলা দরকার বা কি ভাবে পরিষ্কার করা দরকার।
বালিশ
বছরের পর বছর একই বালিশ ব্যবহার করবেন না।
প্রতি ২-৩ বছর পর পর বালিশ বদলে ফেলুন বা বালিশের তুলো বদলে ফেলুন।
আরামদায়ক ঘুম আসবে সহজেই।
বালিশের কভার
সপ্তাহে এক বার বালিশের কভার ধোয়া উচিত।
বিছানার চাদর
মানুষের শরীরের মৃতকোষ, ব্যাকটেরিয়া, দেহের ময়লা এসব জমে থাকে চাদরে।
এটি শরীরে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রতি সপ্তাহে চাদর পরিষ্কার করা দরকার।
এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘আলো-বাতাসপূর্ণ ঘর জীবাণু ধ্বংস করে।
মোজা
মোজা ধুতে হবে একবার পরার পরই।
ব্যাগ
কখনো কি নিজের হাত ব্যাগ বা ভ্যানিটি ব্যাগটি ধুয়েছেন?
এই ব্যাগে করেই কিন্তু জীবাণু ঢোকে আপনার বাড়িতে।
সপ্তাহে একবার হাত ব্যাগ ধুয়ে ফেলুন।
যেটা ধুতে পারবেন না, সেটা পরিষ্কার করুন জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে।
জিন্সের প্যান্ট
জিন্সের প্যান্ট ৪/৫ বার পরার পর ধুয়ে ফেলুন।
ম্যাটরেস
ম্যাটরেস/তোশক/জাজিম অন্তত বছরে একবার পরিষ্কার করুন।
প্রথমে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন, তারপর কাপড়ে জীবাণুনাশক দ্রব্য নিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।
ফ্রিজ
ফ্রিজ মাসে একবার পরিষ্কার করুন।
কার্পেট
কার্পেট একই ভাবে ম্যাটরেসের মত পরিষ্কার করে রোদে দেবেন। প্রতি ৪ মাসে একবার।
হাঁড়ি পাতিল
উঠিয়ে রাখা হাঁড়ি পাতিল প্রত্যেক ৫ মাসে একবার বের করে ভালো করে মেজে, শুকিয়ে আবার তুলে রাখুন।
টুথব্রাশ
টুথব্রাশে সাধারণত ১০ মিলিয়ন জীবাণু থাকে।
এর মধ্যে থাকে ব্যাকটেরিয়া এবং ফ্লু তৈরিকারী ভাইরাসও।
এমনকি হেপাটাইটিস সি-র ভাইরাসও পাওয়া যায় টুথব্রাশের ভেতর।
তাই একজনের ব্রাশ কখনোই আরেকজন ব্যবহার করবেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতি তিন মাস পরপর টুথব্রাশ বদলানো উচিত।
প্রতিবার ব্যবহারের পর ব্রাশকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
এরপর শুকাতে হবে। আর ব্রাশ সংরক্ষণ করার জন্য ঢাকনাওয়ালা ক্যাবিনেট ব্যবহার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, এক মাস পরপর ডিশওয়াশার দিয়ে ব্রাশ পরিষ্কার করুন। পাঁচ মিনিট গরম জলে ফুটান। তারপর ব্যবহার করুন।
গামছা বা তোয়ালে
গামছা বা তোয়ালে দিয়ে মোছার সময় আমাদের শরীরের মৃত কোষ , বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এর মধ্যে চলে আসে।
প্রতিদিন ব্যবহারের পর গামছা বা তোয়ালে ভালো করে ধুয়ে দিন।
তারপর পারলে কড়া রোদে শুকিয়ে নিন।
গামছা প্রতি ৬ মাস অন্তর আর দুই থেকে তিন বছর অন্তর তোয়ালে বদলে ফেলা উচিত।
বাথ পুফ বা বাথ লুফা
বাথ পুফ বা বাথ লুফা বা যাকে আমরা সাধারণত বলি ছোবড়া।
এই ছোবড়া দিয়ে গা ঘষার সময় আমাদের শরীরের মৃত কোষ এতে লাগে যাই , যা থেকে পরে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে।
তাই এটিকে প্রতি ১ বা ২ মাস অন্তর বদলে ফেলা ভালো।
পারফিউম
পারফিউমের বোতলের ঢাকনা যদি খুলে না ফেলা হয়, সেক্ষেত্রে সেটি ৩ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে।
আর বোতলের ঢাকনা খুলে ফেলার পর বছর দুয়েক পর্যন্ত ভালো থাকে।
তাই প্রতি দুই থেকে তিন বছর পর পর পারফিউম বদলে ফেলাই ভালো।
মেক আপ ব্রাশ ( Make-Up Brushes)
পুরানো মেক আপ যদি ব্যবহার করছেন তাহলে এখুনি তা ব্যবহার করা বন্ধ করুন।
কারণ মেক আপের মধ্যে যে রাসায়নিক থাকে তা সময়ের সাথে oxidise হয়ে সেটিকে ব্যবহারের আপযোগী করে তোলে।
কিছু ক্ষেত্রে এতে ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয়ে স্কিন ইনফেক্শন হতে পারে।
মাস্কারা ও আইলাইনার
মাস্কারা ও আইলাইনার চোখের খুব কাছে ব্যবহৃত হয় তাই প্রত্যেক তিন মাস অন্তর এই গুলি পাল্টানো উচিত।
যদি আপনি চোখের কোনো রকম ইনফেকশন থেকে বাঁচতে চান।
Dry eye shadow
ভালো কোম্পানির Dry eye shadow - দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী।
Foundation and concealer
প্রতি বছর পাল্টানো উচিত।
মেকআপ আর পাউডার
বলে রাখি Face/eye মেকআপ এর ক্ষেত্রে যদি লিকুইড বা ক্রিম ব্যবহার করেন তাহলে ৬ মাস আর পাউডার ব্যবহার করলে ১-২ বছর রাখতে পারেন।
লিপস্টিক ও গ্লস
২ বছর রাখতে পারেন।
নেলপালিশ
১ বছর রাখতে পারেন।
মেকআপ স্পঞ্জ
খুব বেশি ব্যবহার করলে প্রতি মাসে পাল্টানো উচিত নয়তো ৩ মাস অন্তর চেঞ্জ করে নেয়া ভালো।
মেকআপ ব্রাশ
এটি ১-৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন যদি ঠিক মতো কেয়ার নেন। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে গরম জল ও বেবি শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
চিরুনি
চিরুনি চিরুনির দাঁড় যদি ভেঙে যাই তাহলে চেঞ্জ করে নিন, কারণ ভাঙা চিরুনি আপনার চুলের ক্ষতি করতে পারে।
চুল ভালো রাখতে কাঠের চিরুনি ব্যবহার করুন।
নোংরা চিরুনিতে yeast ও ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আপনার স্ক্যাল্পে নানারকম চর্ম রোগ তৈরী করতে পারে বা এর থেকে খুস্কিও হতে পারে।
এর থেকে মুক্তি পেতে প্রতি সপ্তাহে চিরুনি সাবান জলে পরিষ্কার করা উচিত।
0 Comments