হলুদ দাঁতকে সাদা করুন সহজে
দাঁত হলুদ হওয়ার কারণে বিব্রত হতে হয় আমাদের অনেককেই।
সমাজে মেলামেশার সময়ে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় দাঁতের এই হলদেটে দাগ।
হলদেটে দাঁত নিয়ে কেউ প্রাণ খুলে হাসতে পারে?
তার নিজের কেমন একটা আড়ষ্ট লাগে। নানা কারণে দাঁতে এই হলুদ দাগ দেখা দিতে পারে।
দাঁতের অযত্ন, তামাক সেবন, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, পান মশলা খাওয়া কিংবা অতিরিক্ত মাত্রায় চা বা কফি পান করার কারণে দাঁতের স্বাভাবিক শুভ্রতা চলে যেতে পারে।
নানা ধরনের টুথপেস্ট, পাউডার, কেমিক্যাল - অনেক এর জন্য নানা রকমের কৌশল প্রয়োগ করে থাকেন।
কিন্তু কোনওটাতেই খুব সুফল মেলে না। শেষে ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে স্কেলিং করতে হয়।
স্কেলিং করানো ছাড়াই ঝকঝকে দাঁত পেতে চান?
তাহলে এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কারণ আজকে আমরা আলোচনা করব কি ভাবে বাড়িতেই কয়েকটি সহজ উপায়ে সাদা ঝকঝকে দাঁত পেতে পারেন।
বেকিং সোডা ও জল :
প্রথমটি বেকিং সোডা, এবং দ্বিতীয়টি জল।
একটি পাত্রে এক চা চামচ বেকিং সোডা নিন। এবার তাতে পরিমান মতো জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করুন।
এবার এই পেস্ট আঙুলে করে তুলে দাঁতের উপরে লাগিয়ে দিন। মনে রাখবেন, দাঁত মাজার মতো করে দাঁতে মিশ্রণটি ঘষার প্রয়োজন নেই।মিশ্রণটি শুধু লাগিয়ে রাখুন দাঁতের উপরে।
তিন মিনিট পরে কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।করার পর দেখবেন হাতেনাতে ফল পেয়ে যাবেন।
বেকিং সোডার মধ্যে প্রাকৃতিক whitening বৈশিষ্ট্য আছে, আর বেকিং সোডা দাগ বা stain দূর করতেও সাহায্য করে।
এর কারণে বাণিজ্যিক টুথপেস্টে ব্যবহার করা হয়, উপরন্তু, বেকিং সোডা আপনার মুখের মধ্যে একটি alkaline environment সৃষ্টি করে, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হতে বাধা দেয়।
তবে এই process টি সপ্তাহে ২-৩ বারের বেশি apply করা যাবে না।
অনেকে হয়তো বলে থাকবেন যে পাতিলেবুর রস মেশানো যেতে পারে , কিন্তু আজকাল কার মডার্ন সায়েন্স বলছে যে পাতিলেবুর রসে অতিমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে যা দাঁতের এনামেল ও ক্যালসিয়াম কে নষ্ট করতে পারে।
কারণ পাতিলেবুর রসে PH লেভেলের মাত্রা ২.৩ যা খুবই কম , আর যত PH লেভেলের মাত্রা কম তাতো বেশি সেটি এসিডিক, এটা তাড়াতাড়ি দাঁতের ক্ষতি ঘটাতে শুরু করবে।
স্টবেরি ও বেকিং সোডা :
সেলিব্রিটিরা এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকেন। স্ট্রবেরির কিছুটা চামচে নিন।
সেটাকে পিষে কাদা করে ফেলুন, এবার এতে বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে ফেলুন।
এই ভাবে পেস্ট তৈরী করে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্রাশ করুন।
আপনার দাঁত সাদা হতে শুরু করবে।
স্টবেরির মধ্যে malic acid থাকে যা আপনার দাঁতকে exfoliate করে দাঁতের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে আর বেকিং সোডা দাঁতের দাগ বা stain দূর করে।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোল :
তাই ভুল করে কাঠকয়লা ব্যবহার করবেন না।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোল একটি সূক্ষ্ম কালো পাউডার যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক পদার্থ, যেমন নারিকেল শেল, জলপাই পিট, slow burning wood, এই গুলোর থেকে তৈরী করে হয়।
এই গুলি উচ্চ তাপমাত্রায় oxidize হয়ে অ্যাক্টিভেটেড চারকোলে পরিণত হয়।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোলে খুব সূক্ষ ছিদ্র থাকে এবং এর শোষণ ক্ষমতাও বেশি।
এর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র particle গুলি মুখের ভিতরে থাকা টক্সিন পদার্থ ও বাজে গন্ধ কে নিজের মধ্যে শোষণ করে নেয়।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোলে বাজার থেকে কিনে আনতে পারেন আর যদি বাজারে না মেলে তাহলে নিচে ডেসক্রিপশন বক্সে লিংক দেয়া আছে , সেখান থেকেও কিনতে পারেন।
ব্যবহার কি ভাবে করবেন?
এক টুকরো অ্যাক্টিভেটেড চারকোল গুঁড়ো করুন।
তারপর ভেজা টুথব্রাশে গুঁড়ো চারকোল দিয়ে যেভাবে প্রতিদিন দাঁত মাজেন সেইভাবে মাজুন।
দেখবেন আপনার দাঁত সাদা হতে শুরু করবে।
তবে সপ্তাহে ২-৩ দিনের বেশি ব্যবহার করবেন না।
আপেল সাইডার ভিনিগার :
আপেল সাইডার ভিনিগারের প্রধান উপাদান হলো Acetic অ্যাসিড, এর এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুন সক্রিয় ভাবে ব্যাক্টেরিয়ার ধ্বংস করে।
এই ভাবে মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে দাঁতের এনামেল ঠিক রাখে ও দাঁতের সাদা ভাব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
আপেল সাইডার ভিনিগার কে আপনি মাউথওয়াশার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
সকালের ব্রাশ করার আগে এই প্রসেস টি করতে হবে।
জলের সাথে অল্প পরিমান আপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে একটি সল্যুশন তৈরী করতে হবে ও সেই সল্যুশন দিয়ে কয়েক মিনিট কুলি করতে হবে। পরে অবশ্যই জল দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নেবেন।
এসিডিক প্রপার্টি থাকার কারণে ডেইলি ব্যবহার করা যাবে না তাতে দাঁতের এনামেল নষ্ট হতে পারে।
সপ্তাহে ২-৩ দিন করতে পারেন কিন্তু তার মধ্যেও গ্যাপ দিতে হবে।
হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড:
হাইড্রোজেন পেরক্সাইড একটি মৃদু প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট যা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
এটি ব্যবহার করার আগে জানা দরকার আপনার দাঁত কতটা সংবেদনশীল।
যাদের সেনসিটিভ দাঁত তাদের ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন পেরক্সাইড ব্যবহার করা যাবে না।
সব ঠিক থাকলে নরম তুলো দিয়ে ধীরে ধীরে দাঁতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ঘষুন। পরে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সর্বোত্তম ফল পেতে হাইড্রোজেন পেরক্সাইড ও বেকিং সোডা মিশিয়ে ১-২ মিনিট ব্রাশ করতে পারেন দিনে দুবেলা, কিন্তু এক সপ্তাহের জন্য।
এই কৌশল ঘনঘন ব্যবহার করলে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হতে পারে।
0 Comments