খাবারের অপচয় আটকাতে কি করবেন:-
তবে সময়ের পরিবর্তনে সমাজের পরিবর্তন হয়েছে আর তার সাথে পরিবর্তন এসেছে খাবারে।
দেশি বিদেশি বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের দৌলতে যেমন নানা রকমের খাবারের স্বাদ আমরা পেয়েছি, ঠিক সেই ভাবে খাবারের অপচয়ও দিন দিন বাড়ছে।
আজকাল এই খাবার অপচয়ের হার অনেক বেশী। খাবার অপচয় বা খাবার নষ্ট করা কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
খাবার অপচয় কাকে বলে ?
সাধারণত খাদ্য অপচয় বলতে যেটা বুঝি সেটা হলো অভুক্ত খাদ্যকে বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়ার ঘটনা।
অর্থাৎ যে খাবার আমরা খেতে পারিনা, যা অতিরিক্ত পরিমানে বেচে যায় এই খাবারকে ফেলে দেওয়া বা নষ্ট করাকে খাবারের অপচয় হিসাবে ধরা হয়।
খাবার অপচয় বন্ধ করুন
কিন্তু এই খাবার নষ্ট করা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও অনেক সময় ইচ্ছা না থাকলেও খাবার নষ্ট হয়।
আবার অনেক সময় আমাদের মানসিকতাও এক্ষেত্রে অনেকটা দায়ী।
যেমন রাতে একটু ভাত বেঁচে গেছে কেউ খাবে না তাই তা আমরা পরের দিন সেই বাসি ভাত ফেলে দিই।
অনেক সময় ফ্রিজে কিছু খাবার কয়েকদিন ধরে পড়ে থাকে, সেই খাবার খেতে একটু অন্যরকম হয়ে যায়।
তাই কিছু না ভেবেই সেই খাবার ছুড়ে ফেলে দেই ডাস্টবিনে। এই ভাবেই আমাদের হাত দিয়ে খাবার অপচয় হয়।
খাবার অপচয় করা উচিত নয় কেন ?
শুধুমাত্র গরিব লোকেরা খাবার পাচ্ছে না এই ভেবে খাবার অপচয় রোধ করতে হবে, এই ধারণাটা একেবারেই ভুল।
আপনি হয়তো জানেন না যে প্রতিদিন আমরা যতটা পরিমান খাবার কিনি বা তৈরি করি তার প্রায় ১৪% খাবারই অপচয় বা নষ্ট হয়।
শুধু তাই নয় পৃথিবীতে যে পরিমান গ্রীন হাউস গ্যাস (মিথেন) নির্গত হয়, তার প্রায় ৮-১০ শতাংশ পঁচে যাওয়া খাবার থেকে তৈরী হয়।
এই মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে প্রায় ২৫ গুন বেশি ক্ষতিকারক।
একবার ভেবে দেখুনতো এগুলো কি অপচয় না?
এখানেই শেষ নয় জাতি সংঘের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রায় ৮০ কোটিরও বেশি লোক মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মারা যায় অপুষ্টি জনিত কারণে এবং খিদের কষ্টে। যার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার শিশু রয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, প্রতিবছর নতুন করে আরো ১০ কোটি লোক খাদ্য কেনার সামর্থ্য থেকে বঞ্চিত হয়।
অথচ পৃথিবীতে যে পরিমাণ খাবারের উৎপাদন হয়,সেই খাবার সবাই খাওয়ার পরেও খাদ্য বেঁচে যাওয়ার কথা।
কিন্তু বিশ্বব্যাপী খাদ্য পণ্যের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে প্রতিদিনই নতুন করে বহু লোক ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে খাবার কিনতে না পারার জন্য।
জমিতে ফসল ফলানো থেকে খাবার কেনা পর্যন্ত প্রচুর মানুষ জড়িত।
এতে তারা তাদের অর্থ দেন, পরিশ্রম দেন, সময় দেন, আবেগ দেন।
খাবার অপচয় শুধু খাবারের অপচয় না, একই সাথে অর্থ,পরিশ্রম,সময় ও শক্তিরও অপচয় হয়।
নিজের খাবার নষ্ট করা মানে নিজের কষ্টার্জিত টাকারই অপচয়। তাই আজ থেকেই খাবার অপচয় বন্ধ করুন।
খাবারের অপচয় আটকাতে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রোগ-জীবানুতে নষ্ট হওয়া কিংবা পরিবহনের সময় নষ্ট হওয়া খাবারের ব্যাপারে আমরা ব্যক্তিগতভাবে খুব বেশি কিছু করতে পারি না বা আমরা ব্যাক্তিগত ভাবে এর জন্য খুব একটা দায়ী না।
এর পরেও কিন্তু আমরা ব্যক্তিগত জীবনে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে খাবারের অপচয় করে থাকি।
এখানেই আমরা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি খাবারের অপচয়।
পৃথিবীতে কোন কিছুই ফেলনা নয়, বিশেষ করে খাবারের মতো মূল্যবান জিনিস।
চাইলে বেচে যাওয়া খাবার দিয়েই বুদ্ধি করে অনেক কিছুই নতুন করে বানিয়ে ফেলা যায়।
বেঁচে যাওয়া খাবার বা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার এমন ভাবে ব্যবহার করা যায় যা অপচয়ও হয়না আবার সুন্দর করে কাজে লাগানো যায়।
স্মার্ট ক্রেতা:
আপনি একটু সচেতন হলে আর একটু বুদ্ধি খাটালেই খাবারের অপচয় রোধ করতে পারেন।
তার জন্য দরকার বাজার থেকে পরিমিত কেনাকাটা আর যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু রান্না করা।
তাই শুরুটা বাজার করা দিয়ে করলাম।
অনেকেই বাজারে গেলেই একগাদা বাজার করে বাড়ি নিয়ে আসেন, অথচ এত খাবার কেনা-কাটি করার কিন্তু কোনো প্রয়োজনই ছিল না।
এর ফলে দেখা যায় যে সপ্তাহের শেষে বেশ কিছু খাবার ফ্রিজে পড়েই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বা নষ্ট হবার পথে।
আর নষ্ট হলেই সেই সবজি বা খাবারগুলোর স্থান ডাস্টবিন।
অতএব বাজার করার সময় অতিরিক্ত বাজার না করে যে টুকু দরকার সেটুকুই বাজার করুন।
সঠিকভাবে খাবার সংরক্ষণ:
খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে খাবারের অপচয় রোধ করা যায়।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে কিভাবে ফলমূল, শাক সবজি সংরক্ষণ করতে হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে - আলু, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, শশা কখনোই ফ্রিজের মধ্যে রাখা ঠিক নয়।
এগুলো ঘরের তাপমাত্রায় আলাদা আলাদা করে রাখা উচিত।
পাতাযুক্ত কাণ্ড এবং লতানো সবজি জল দিয়ে রাখতে হবে।
শাক-সবজি ফ্রিজে এয়ার টাইট প্লাস্টিকের ব্যাগে ভোরে রাখলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
বেশি রুটি বানিয়ে ফেলল সেইগুলি ফ্রিজে রাখা যেতে পারে যদি মনে হয় যে সেগুলো একবারে খেয়ে শেষ করা সম্ভব নয়।
লঙ্কা বা মরিচের বোটা ছাড়িয়ে কাগজের পকেটে ভোরে ফ্রিজে রাখুন। অনেকদিন পর্যন্ত তাজা থাকবে।
ফ্রিজ চেক করা:
প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য মুদিখানায় যাচ্ছেন। তার আগে ফ্রিজ খুলে দেখে নিতে পারেন কোনটি আপনার প্রয়োজন। সেই টুকু কিনে আনুন।
এতে করে বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও সেই জিনিসটি কেনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেন।
তালিকা তৈরি করা:
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় ৭০% লোকই কোনোরকম লিস্ট ছাড়াই কেনাকাটা করতে চলে যান।
কোন কোন জিনিসটা আপনার প্রয়োজন সেটার যদি তালিকা বানিয়ে রাখতে পারেন তাহলে কেনাকাটি করার সময় পুনরাবৃত্তি হবে না।
তাই বাজারে যাওয়ার সময় অবশ্যই পণ্যের একটা লিস্ট তৈরি করে নেবেন এবং দোকান থেকে সেই লিস্ট অনুযায়ী কেবল কেনাকাটা করুন।
লিস্টের বাইরে দোকানে থাকা বিভিন্ন রকমের খাবার কেনার লোভ অবশ্য আপনাকে সামলে চলতে হবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার:
কেনার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ দেখে নিতে হবে এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন খাদ্যসামগ্রী খেয়ে ফেলা যায় সে অনুযায়ী খাদ্য কিনতে হবে।
উদাহরণ হিসাবে পাউরুটির মতো অল্পমেয়াদি খাবারটি কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল করবেন সেটির মেয়াদ কতদিন বাকি আছে।
সেই সাথে এই মেয়াদের ভেতরে খাবারটি পুরোটি শেষ করা সম্ভব হবে কি না সেটিও মাথায় রাখা উচিত।
হটাৎ আপনি খেয়াল করলেন প্যাকেটজাত খাবারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এই অবস্থায় রান্না করেই হোক বা অন্য কোনো উপায়ে যদি সেই খাবারটিকে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে ফেলে না দিয়ে সেই ব্যবস্থাও করা উচিত।
প্যাকেট জাত লিকুইড দুধ, দই কিনে আনার সময় অবশ্যই মেয়াদের তারিক দেখে নেবেন।
নাগালের মধ্যে খাবার:
ইংরেজির এই প্রবাদ বাক্যটি আপনারা জানেন যে - ‘Out of sight, Out of mind’ .
খাবার সংরক্ষণের সময়ও কিন্তু এই প্রবাদ বাক্যটি মিলে যায়।
রান্নাঘরের কর্নারে বা দূরে কোথাও রাখার ফলে ৯০% ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় যদি সেটি আপনার দৃষ্টিতে না পড়ে।
ফলে সময়ের সাথে সাথে খাবারটি নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন সেটি নজরেই থাকে।
যতটুকু লাগে ততটুকু রাঁধে:
আমাদের কার কতটুকু খাবার গ্রহণ করার ক্ষমতা আছে সেই ব্যাপারে সবারই একটা ধারণা আছে।
কিন্তু তারপরেও ‘চোখের খিদে’ মেটানোর জন্য আমরা অতিরিক্ত খাবার প্লেটে নেই যার অনেকটাই শেষে নষ্ট হয়।
বিনা কারণে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে আজকাল খুব অল্প বয়সেই অনেকের হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ হচ্ছে।
তাই যতটুকু খেতে পারবেন ঠিক ততটুকুই খাবার প্লেটে নেওয়া উচিত।
গৃহিণীদের এই ব্যাপারে একটা বিশেষ আইডিয়া হয়ে যায়।
তাই সেই ভাবেই রান্না করুন। আর পুরো পেট ভোরে খাবার খাওয়ার থেকে পেট অল্প খালি রেখে খেলে শরীরের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না।
অফিসের খাবার:
অফিসের সহকর্মীদের সাথে খাবার খেতে বাইরে যাওয়া কিংবা কোন রেস্টুরেন্টে গিয়েখাবার খাওয়া বেশ মজাদার বলে মনে হতে পারে আপনার।
কিন্তু রেস্টুরেন্টের এই খাবার গুলো কেবল মাত্র দামই হয় না, দীর্ঘদিন খাবার ফলে পেটের নানারকম অসুখ দেখা দিতে পারে।
ওপর দিকে খাবার অপচয়ের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। অফিসের মধ্যাহ্নভোজন বা টিফিন হিসেবে বাড়ির তৈরী খাবার নিতে পারেন।
এতে স্বাস্থকর খাবারের সাথে সাথে অর্থ সাশ্রয় হয় এবং সেই সাথে কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে।
সকালে যদি হাতে সময় কম থাকে, তাহলে আগের রাতেই খাবার ছোট-ছোট কন্টেইনারে করে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন।
এভাবে, সময়ও বাঁচবে, অর্থ বাঁচবে আর সাথে স্বাস্থটাও বাঁচবে।
কম্পোজিট সার:
বেঁচে যাওয়া খাবার ফেলে না দিয়ে ব্যবহার করার একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে এগুলো দিয়ে আপনার প্রিয় বাগানের জন্য কম্পোজিট সার বানিয়ে নিন।
আজকাল অনেকেই বাড়িতে টবে ফুল কিংবা সবজি চাষ করেন।
এই রাসায়নিক মুক্ত সার গাছের জন্য শক্তির যোগান দেয়।
কি ভাবে কম্পোজিট সার বানাবেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য গুগল করলেই পেয়ে যাবেন।
এতে নষ্ট খাবারকে অন্য ভাবে ব্যবহার করে কাজে লাগানো গেলো আবার গাছের যত্ন নেয়ার জন্য আলাদা খরচও করতে হলো না।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
এবারে দেখ নিন বাসি খাবারকে কিভাবে আবার নতুনের মতো ব্যবহারের উপযোগী করে তুলবেন - সে ব্যাপারে কয়েকটা টিপস
পাউরুটি-
পাউরুটি আমরা সকলেই কম বেশি খাই। বেশিদিন হয়ে গেলে বাসি হয়ে যায় বলে ফেলে দিই।
কিন্তু পাউরুটি ফেলে না দিয়ে দুধে ২ মিনিট ভিজিয়ে নিয়ে মাইক্রো ওয়েভে মিনিট দুয়েক দিলেই খাওয়ার যোগ্য হয়ে উঠবে।
এ ছাড়াও বাসি পাউরুটি দিয়ে বানাতে পারেন ব্রেড পাকোড়া, ফ্রেঞ্চ টোস্ট ইত্যাদি মুখরোচক খাবার।
চিজ-
চিজও এখন আমাদের নিত্য দিনের খাবার জিনিস।
চিজের ব্যবহার সাধারণত পিজা, কেক, স্যুপ ইত্যাদি বানানোর জন্য করে থাকি আমরা।
তবে এই চিজ অনেকদিন ফ্রিজে রাখলে শক্ত হয়ে যায়। ফলে ফেলে দেই আমরা।
এখন থেকে এইগুলি ফেলে না দিয়ে আপনি গ্রেট করে ওমলেট বা চিজ সসও বানিয়ে নিতে পারেন।
ভাতের ফ্যন-
রান্নার পরে ভাতের ফ্যন আমরা সকলেই ফেলে দেই। মাঝে মধ্যে অনেকে সুতির কাপড় শক্ত করতে ভাতের মাড় ব্যবহার করেন।
কিন্তু এই ফেলনা জিনিসেই থাকে প্রচুর ভিটামিন।
কিন্তু জানেন কি ভাতের মাড়ে প্রচুর ক্যালোরি থাকে এবং এটি একটি সুষম খাবার বলেই বিবেচিত।
শারীরিক ভাবে দুর্বল ব্যাক্তিরা এর সাথে চাইলে সামান্য লবণ, চিনি, মধু মিশিয়ে পানীয় হিসেবেও খেতে পারেন।
গ্রাম বাংলায় এখনোও অনেকে বিচুলির সাথে ভাতের ফ্যান মিশিয়ে গোখাদ্য হিসাবে ব্যবহার করেন।
ভাতের ফ্যানের উপকারিতা-
ফেসওয়াশ হিসেবে ভাতের ফ্যন বা মাড় ঠাণ্ডা করে তা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। উপকার পাবেন।
ভাতের মাড় নিয়ে চীন ও জাপানে এর আগেও যথেষ্ট গবেষণা হয়েছে এবং বর্তমানে হচ্ছেও, কারণ চীন জাপানে ভাতের ব্যবহার প্রচুর পরিমানে হয়ে থাকে।
২০০৪ সালে চীনের বিজ্ঞানী মি. লিন এই ফেলে দেয়া ভাতের মাড় নিয়ে গবেষণা করেছেন।
লিনের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ভাতের মাড়ে ছয় রকমের উপাদান রয়েছে।যার মধ্যে আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও কপার অন্যতম।
ভাতের মাড় যে ত্বকের জন্য কতটা উপকারী তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
ভাতের মাড় দিয়ে মুখ ধুলে, মুখ পরিষ্কার হয়। ত্বককে ফর্সা করতে সাহায্য করে।
মুখের ত্বকে অনেক সময় ছোট ক্ষত বা গর্ত তৈরী হয়। এই গর্ত বা ক্ষত সারাতে ভাতের মাড় খুব কার্যকরী।
চুল কে উজ্জ্বল করতে ভাতের মাড় দিয়ে চুল পরিষ্কার করুন।
জল দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ভাতের মাড়ের মাঝে তুলো ভিজিয়ে সমস্ত মুখে লাগাবেন। এটি টোনার হিসেবে কাজ করবে।
ত্বকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চেরাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এর এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে ত্বককে এর বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
গ্রীষ্ম প্রধান দেশ যারা বসবাস করেন তাদের ত্বকের উপর তামাটে প্রলেপ পড়ার প্রবণতা থাকে, ভাতের মাড় সহজে সেই তামাটে প্রলেপ গঠনে বাধা দেয়।
ভাতের ফ্যান আমাদের ত্বকে হাইপার পিগমেন্টেশন প্রতিরোধ করে ও বয়সজনিত ছাপ পড়তে দেয় না।
আগের রাতের বাসি ভাত-
আগের রাতের বাসি ভাত বেচে গেলে সকালে fried rice এর মতো করে ফ্রাই করে নিতে পারেন। মনে হবে না যে আপনি বাসি ভাত খাচ্ছেন।
এর জন্য লম্বা করে পেয়াজ কেটে তার সাথে গাজর কুচি, টমেটো কুচি আর বাদাম ভেজে তার মধ্যে বাসি ভাত দিয়ে একটা সুস্বাদু ফ্রাই বানিয়ে নিতে পারেন।
মুখরোচক বানানোর জন্য আপনি টমেটো সস ও ব্যবহার করতে পারেন এই পদটিতে ।
মিষ্টি-
বাড়িতে অতিথি -মেহমানের আসা যাওয়া লেগেই থাকে। আর অনেকেই হাতে করে মিষ্টি নিয়ে আসেন। তাই অনেক মিষ্টিও রয়ে যায় ফ্রিজে।
ফ্রিজে মিষ্টি পুরনো পুরোনো হয়ে গেলে খেতেও ভাল লাগেনা কারণ শক্ত হয়ে যায়।
কিন্তু শক্ত হয়ে গেলেই কি সেই মিষ্টি ফেলে দিতে হবে?
বাসি মিষ্টি ফেলে না দিয়ে ভাত বা সুজির সাথে মিশিয়ে কোন নতুন ডেজার্ট বানিয়ে নিতে পারেন।
এতে মিষ্টিও অপচয় হলো না, আবার নতুন একটা পদ বানিয়ে নিতে পারলেন।
লেবুর রস-
অনেক সময় কোন রান্না করতে গেলে বা কোন প্রয়োজনে কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের দরকার পড়ে। তখন বাধ্য হয়েই আমাদের পুরো লেবুটাই কাটতে হয়।
এরপর ব্যবহার না করলে লেবুটা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
তাই কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের দরকার পড়লে একটা কাঁটাচামচ দিয়ে লেবুর একটা দিক ফুটো করে নিন। তারপর চিপে প্রয়োজন মতো রস বের করে নিন।
এরপর এইভাবে ফ্রিজে রাখলেও বহুদিন পর্যন্ত লেবু ভালো থাকে।
এই ভাবে একটু বুদ্ধি খাটালেই কিন্তু খাবারের অপচয় রোধ করতে পারবেন।
Read other articles:
বেকিং সোডার কয়েকটি অসাধারণ ব্যবহার
তামার গ্লাসে জল খাবার উপকারিতা
1 Comments
Also if you have a bit of time then, read my recipes at chillionfire or, Food Recipes and suggest to me how to improve them.